ধর্ষকদের কঠিন শাস্তি দিন

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় কারাগারে স্কুলছাত্র,অজু করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার ৭২ বছরের বৃদ্ধা,সিলেটে স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ছাত্রলীগ কর্মী নিজু গ্রেফতার, ধর্ষণ মামলায় ভিপি নুরসহ ৬ জনের গ্রেফতার চেয়ে তরুণীর আবেদন, ভাতার কার্ড দেয়ার কথা বলে নারীকে ধর্ষণ, শিবির নেতা কর্তৃক কলেজ ছাত্রী ধর্ষিত, কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাসিক কর্মচারী গ্রেফতার, সিদ্ধিরগঞ্জের মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক শিশু ছাত্রকে বলাৎকার! ধর্ষণ করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা আটক,কোচিং সেন্টারে ছাত্রীকে ধর্ষণ করলেন শিক্ষক, সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণ,মেয়েকে ধর্ষণ করেছে বাবা, ৭০ বছরের বৃদ্ধাকে ধর্ষণ, ফাদার ধর্ষণ করেছে কিশোরীকে, টানা ৩ দিন আটকে রেখে মাদ্রাসার শিক্ষক শিশু ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে মাদ্রাসারই ছাদে,বোনের সাবেক স্বামী তার বন্ধুদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণ-খুন পরে আত্মহত্যা, সিলেটে স্বামীর সাথে নিরাপদ ভেবে বেড়াতে যাওয়া বধূটির ধর্ষণ, কুপ্রস্তাব না মানায় গৃহবধূকে ধর্ষণ, টাকা নিয়ে আপোষ বাবার। এসব সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া দৈনিক সংবাদপত্রের শিরোনাম । কোনটা কম ভয়াবহ বা বিভৎস বা কম আতংকের? মানসিক প্রতিবন্ধী নারী যাকে এলাকার মানুষ পাগলী ডাকে সে শিশুর জন্ম দিয়েছে। কেমন করে সম্ভব ! কেমন করে ? এত বিকৃতি কেমন করে স ম্ভব? সর্বশেষ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় সবাই জেগেছে। কারণ এই দেশের মানুষ চোখে না দেখলে সে জিনিস ঠিক বিশ্বাস করে না।
ধর্ষণের ঘটনা কি হঠাৎই বেড়ে গেছে নাকি গণমাধ্যমে আসার কারণে সেটা মানুষ জানতে পারছে। সারা বাংলাদেশের সব ধর্ষণের ঘটনা কি গণমাধ্যমে আসছে নাকি কোথাও কোথাও চেপে যাচ্ছে আর কোথাও কোথাও তা অপ্রকাশিত হয়ে থাকছে। এমন বেপরোয়া হওয়ার কারন কি? শিশু থেকে বাহাত্তর বছরের বৃদ্ধাও ধর্ষিত হচ্ছে। ধর্ষক কারা ? বখাটে যুবক,ছাত্র, ভবঘুরে, বদমাশ, অশিক্ষিত না শিক্ষিত, স্কুল কলেজের শিক্ষক,মাদ্রাসার শিক্ষক, মিশনারির পাদ্রী,ছাত্র নামধারী নেতা কে নাই এই তালিকায়? এরা কি বিবেক বর্জিত কোন মানুষ নাকি এরা স্রেফ ধর্ষক। হ্যাঁ এদের পরিচয় এরা মানুষরুপী জানোয়ার, এরা কোন খারাপ পরিবার থেকে উঠে আসা নরকের কিট। এদের মা বোন নেই এরা কারো গর্ভে জন্ম নেয় নাই, এদের নিজেদেরও কোন পরিচয় নাই, এদের একটাই পরিচয় এরা ধর্ষক। এদের জন্ম হয়েছে সমাজকে কলুষিত করতে পরিবারকে কলুষিত করতে দেশকে কলুষিত করতে । এছাড়া এদের আর কোন কাজ নাই, তাই তাদের এই সমাজে এই পরিমান অপরাধ করে বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। তাদেরকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে । তাদেরকে কঠিন শাস্তি না দিলে এই সমাজ, এই ভাইরাস রোগ আমাদের সমাজের জন্য এক বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
সর্বশেষ দুটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের তথাকথিত নেতাদের দ্বারা । সিলেটের এমসি কলেজে ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। দুটি ঘটনায় আমাদের বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, কোথায় দাঁড়িয়ে আছি আমরা ? কি আমাদের অবস্থা, কি আমাদের নৈতিকতা, কত বড় সাহস ও পৈশাচিক না হলে তারা এমন কাজ করতে পারে। সরকারি ছাত্র সংগঠনের নেতা হওয়ার কারণেই কি তারা পৈচাশিক কাজ করার এই দূঃসাহস পেয়েছে? এই দুটি ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে। প্রতিদিনই দেশের কোথাও কোথাও এমন ঘটনা ঘটে যাচ্ছে , কোনটার আমরা খবর পাচ্ছি কোনটার পাচ্ছি না। স্বামীর সাথে বেড়াতে গিয়ে কোন নারী কলেজ পড়ুয়া ছাত্র নামধারী নেতাদের দ্বারা স্বামীর সামনে ধর্ষিত হবে, বাবা-মার সামনে মেয়েকে বিবস্ত্র করে ছাত্র নামধারী নেতারা পৈশাচিক কায়দায় ধর্ষণ করবে, এই সমাজে কি তা কল্পনা করা যায়। কোথায় চলেছি আমরা, কোথায় চলছে আমাদের সমাজ। আমরা কি সভ্য সমাজে বাস করছি, নাকি আমরা অসভ্য হয়ে গেছি। সরকারি দলের নামধারী এই ছাত্রনেতারা ধর্ষণের কাণ্ড ঘটিয়ে সরকারকে ডুবাচ্ছে। যদিও ধর্ষক সবাই গ্রেফতার হয়েছে কিন্তু তার পরেও সরকারের দায় এড়াতে পারে না । ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যথার্থই বলেছেন সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের দায় সরকার এড়াতে পারে না। আর এড়াতে পারে না বলেই এই ধর্ষকদের বিরুদ্ধে একশন হচ্ছে তারা গ্রেপ্তার হচ্ছে এবং বিচারের সম্মুখীন হচ্ছে। ধর্ষক কোন দলের হতে পারে না, কোন ছাত্র তার বোন সমতূল্য কোন ছাত্রীকে ধর্ষণ করতে পারে না, শিক্ষক হয়ে কিভাবে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে? এরা নরপশু, এরা অমানুষ, এরা সমাজের কিট । এরা দলের বোঝা, পরিবারের বোঝা, রাষ্ট্রের বোঝা। এই বোঝা আর বহন করা যায় না। এদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে।কোনভাবেই যেন আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে পার পেয়ে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
সমাজে অপরাধ আছে, হয়তো অপরাধ থাকবে, কিন্তু অপরাধীদের চিহ্নিত করতে হবে তাদের কঠিন বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমাদের শিক্ষা-সংস্কৃতি ধর্মীয় আচার আচরণ কোন ভাবেই এ অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। যে পরিবারের কুলাঙ্গার ব্যক্তিটি এই অপকর্ম করছে, তার পরিবারে তার কি অবস্থা বা সেই পরিবারেরই সমাজে কি অবস্থা। সতের কোটির বেশি মানুষের এই দেশে বিকৃত রুচির এই মানুষরুপী পশুরা কি বোঝে তারা কি করছে? নিজের,সমাজের,পরিবারের বা দেশের তারা কি পরিমান ক্ষতি করেছে? বিবেকবুদ্ধি কত নিম্ন পর্যায়ে নামলে একজন মানসিক রোগী পাগলিকে ধর্ষণ করতে পারে? সত্তর বছরের বৃদ্ধাও রেহাই পায় না এইসব কুৎসিত রুচির জানোয়ারদের হাত থেকে। চার বছরের শিশুকে ধর্ষন, মা বাবাকে বেঁধে রেখে মেয়েকে ধর্ষণ। ভাবা যায়! তারা কি আইনের ভয় করে নাকি আছে তাদের ধর্মের ভয়, সমাজ বা পরিবার তো তাদের কাছে কিছুই না। তা না হলে পিতা কিভাবে ধর্ষন করে নিজ কন্যাকে। মাদ্রাসার হুজুর কিভাবে পরকালের ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন তার নিজের ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এই কুলাঙ্গারদের জন্য কি বিচার? নানা মহল থেকে বলা হচ্ছে এদের বিচার ক্রসফায়ারে। হয়তো তারা প্রচণ্ড ক্ষোভ থেকে এই কথা বলছে। বলাই স্বাভাবিক, ভিকটিম যদি নিজের মেয়ে বা বোন বা স্ত্রী হয় কি বিচার চাইবে? স্পটে বিচার করে ফাঁসি দিলেও কি সেই ক্ষতি কোনভাবে কমবে? কিন্তু কঠিন বিচার করতে হবে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, দ্রুত বিচার করতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা ট্রাইবুনাল, দ্রুত বিচার।
এই অপরাধের কারণ খুঁজে বের করতে হবে। কেন এমন পৈশাচিক কাণ্ড ঘটছে ? এই সমাজের কোথায় আমাদের দুর্বলতা, যারা এই সমস্ত কান্ড ঘটাচ্ছে তারা এই সমাজেরই অংশ। কোন না কোন পরিবারের সদস্য,যে পরিবারের এই কুলাঙ্গার মানুষেরা এই সকল অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে তাদের পরিবার নিশ্চয়ই তাদের এই অপকর্মকে সায় দেয় না। তাদের পরিবারের মানুষদের মুখে কালি লেগেছে এই সমস্ত কুলাঙ্গারদের জন্য। তারা এখন ঐ পরিবারের বোঝা, তাদের অপকর্মের জন্য ওই পরিবার এখন সমাজে মুখ দেখাতে পারছে না। এই পরিবার এই সমাজ এই রাষ্ট্র এই দেশকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে, অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে, ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে, সমস্ত অপকর্মের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে হবে । মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে, অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কোন ভাবেই ছার দেয়া যাবে না । রাজনৈতিক পরিচয়ে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় কোনভাবেই যেন তারা পার পেয়ে না যায় সেদিকে নজর দিতে হবে । সরকার ইতিমধ্যেই এই সমস্ত ধর্ষক কুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তারা অনেকে আইনের আওতায় এসেছে এবং বিচার হচ্ছে। সরকারকে কঠোর মনে হচ্ছে, সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সকল অপকর্মকরি,দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা ঘোষণা করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই অপরাধীদের কোন ছাড় নাই, অপরাধী যেই হোক যে দলেরই হোক, যত প্রভাবশালী হোক,যে ব্যক্তি হোক তাদের কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। কোনোভাবেই তাদের ছাড় দেয়া যাবেনা । বিচারের জন্য কোন দেরি মেনে নেয়া হবে না। বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা করা চলবে না। কঠিন বিচার করতে হবে এবং তা এখনই।